সুলতানপুর একটি গ্রামের নাম-সুলতানপুর একটি ইউনিয়নের নাম সমতট অঞ্চলের বর্তমান তিতাস পাড়ে, হাজার বছর পূর্বে অথৈ জলরাশির মধ্যে যে কয়টি অঞ্চল ভেসে উঠে ছিল সুলতানপুর গ্রামটি তারই একটি। ক্রমান্বয়ে ভেসে উঠা চর হয়ে উঠে সুজলা সুফলা।
এমন সুন্দর চরটিতে আস্তে আস্তে বসতি গড়ে উঠে। বসতি স্থাপনকারীরা বেশির ভাগ ধনী ছিল। সুলতানপুর গ্রামের আনাচে কানাচে ইট-পাথরের অট্টালিকার ধ্বংশাবশেষ ইহার সাক্ষ্য বহন করে। এখানে বসতি স্থাপনকারীরা কষ্টি পাথরের মূর্তি স্থাপন করেছিল। বিগত ২০০৮ ইং সনে স্থানীয় মঙ্গল মেম্বারে পুকুর খননের সময় প্রায় সাত মন ওজনের কষ্টি পাথরের মহাদেব মূর্তি পাওয়া গিয়াছে।
বাংলাদেশে এ পর্যন্ত পাওয়া মূর্তিগুলির মধ্যে এটাই বৃহৎ । এই মূর্তিটি কুমিল্লা যাদুঘরে সংরক্ষিত হয়েছে। এছাড়াও স্বর্ণ ও মূর্তির ভাঙ্গা অংশ পাওয়া গিয়াছে। প্রবীণগণের কাছে জানা যায় এখানে অন্যান্য সম্প্রদায়ের পাশাপাশি কোচ্ সম্প্রদায়ের বসতি ছিল। শতশত বৎসরে বিবর্তনে ঐ সমস্ত জাতি গোষ্ঠি এক সময় বিলীন হয়ে যায়। তৎপর বিভিন্ন প্রাচীন বসতি অঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা লোকজন নতুন করে আবার বসতি স্থাপণ শুরু করে। ক্রমান্বয়ে আশ পাশের এলাকাও ভরাট হতে থাকে আর ঐ নতুন ভরাট অঞ্চলগুলিতে বসতি স্থাপন শুরু হয়। ঐ সমস্ত প্রাচীন জনপদের পরিচিতি বা নাম কী ছিল জানা যায় না।
সুলতানী আমলে এই জনপদটির নাম সুলতানপুর হয়েছে বলে প্রবীনেরা অভিমত প্রকাশ করেন। সুলতানী আমলেই এখানে মুসলিম সমাজ গড়ে উঠতে থাকে । সুলতানপুর জামে মসজিদটি প্রায় ৪০০ বৎসর পূর্বে নির্মিত হয়ে ছিল।
যখন ব্রিটিশ দখলকারীরা কিছু গ্রাম মিলিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ গঠন করতে থাকে তখন বৃহৎ গ্রাম হিসাবে বড় সুলতানপুর কে কেন্দ্র করে সুলতানপুর ইউনিয়ন পরিষদ গঠন করে আর এই ইউনিয়নের সাথে যুক্ত হয় পাশাপাশি পাতৈরহাতা, উরশীউড়া, শিলাউর, হাবলাউচ্চ এবং বিরামপুর মৌজা।
সমতট অঞ্চলের সুলতানপুর গ্রামটি ত্রিপুরা রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত ছিল। এবং সরাইল পরগনার অধীন ছিল। ১৯৪৭ দেশ বিভাগের পর সুলতানপুর গ্রামটি কুমিল্লা জেলার অন্তর্ভুক্ত হয়। কিন্তু লেখালেখিতে জেলা ত্রিপুরা লেখা হত। ১৯৬৩ সনে ত্রিপুরা স্থলে জেলা কুমিল্লা লেখা শুরু হয়। বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-কুমিল্লা ডিস্ট্রিক বোর্ড রাস্তা সুলতানপুর ইউনিয়নের পাতৈরহাতা উরশীউড়া এবং সুলতানপুর গ্রামের উপর দিয়ে ব্রিটিশ আমলেই নির্মিত হয়েছিল। পরবর্তীতে ১৯৬২-১৯৬৩ সনে উক্ত ডিস্ট্রিক বোর্ড রাস্তাটিকে কেন্দ্র করে। সড়ক ও জনপদ বিভাগ পাকা রাস্তা নির্মাণ করে যাহা ব্রাহ্মণবাড়িয়া কুমিল্লা মহাসড়ক নামে পরিচিত। বর্তমানে সুলতানপুর হইতে আখাউড়া হইয়া ভারতের আগর তলা পর্যন্ত পাকা রাস্তা নির্মাণ হয়েছে যাহা দ্বারা কলকাতা আগরতলা পর্যন্ত বাস ট্রাক এবং অন্যান্য যানবাহন চলাচল করে থাকে ।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস